• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

বিজয়ের মাসে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২০  

স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতিকে চিরঞ্জীব করার উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়। রাজধানী ঢাকার ১৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সাভারে ৬০ একরের বেশি জায়গা নিয়ে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে বলে জানানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী মাসের (ডিসেম্বর) প্রথম সপ্তাহের কোনও একসময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন এবং ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে সেটি উদ্বোধন করা হবে।

গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত ইচ্ছা অনুযায়ী সাভারে প্রস্তাবিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ হবে জাতির গৌরব। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং গৌরবোজ্জ্বল জাতীয় ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সভ্যতার প্রতীক হবে এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধে থাকবে একটি জাতীয় উদ্যানও।’

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য এবং নির্মাণ কাজ অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য তাঁর দফতরের সব পদস্থ অফিসার ও ফিল্ড অফিসারদের নির্দেশ দেন। এনা’র খবরের উল্লেখ করা হয় যে, নগর উন্নয়নমন্ত্রী মতিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া স্বাধীনতা সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র এখানে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রস্তাবিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মিত হলে শহীদদের অস্থি, কঙ্কাল ও অন্যান্য  নিদর্শনগুলো সেখানে পাঠানো হবে।  স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য সাভারে জমি সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।দেশের বিশিষ্ট স্থপতিরা ইতোমধ্যে স্মৃতিসৌধের খসড়া নকশা তৈরির কাজ করছেন।’ জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের চূড়ান্ত নকশা তৈরির আগে বিদেশি স্থপতিদের সাহায্য নেওয়া হবে বলে বাসসের খবরে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত,  গত বছর স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে বাংলাদেশের  নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে সমাধি ক্ষেত্রের কাছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে গৃহীত হয়েছে।

বাংলাদেশ অবজারভার, ২৫ নভেম্বর ১৯৭২সাধারণ পরিষদে আপস ফর্মুলা

জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে মুলতবি প্রস্তাবটি কোনও রকম ক্ষতি ছাড়াই সাধারণ পরিষদে গ্রহণের ব্যাপারে একটি আপস প্রস্তাবে নীতিগতভাবে মতৈক্য হয়েছে বলে কূটনৈতিক মহল খবর দেয়। তারা বলেন যে, প্রস্তাব মোতাবেক গত বছর পাক-ভারত যুদ্ধের পর ভারতে আটক ৯০ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানি সৈন্য ও বেসামরিক লোক ফেরত পাঠানোর পক্ষে এবং অপর একটি প্রস্তাবও ভোটাভুটি ছাড়াই পরিষদকে একই সময়ে গ্রহণ করতে বলা হবে। প্রথম প্রস্তাবটি যুগোস্লাভ রাষ্ট্রদূতের, যারা সব সময় চেয়েছেন যে, এই প্রস্তাবটি কোনোরকম ভোটাভুটি ছাড়া গ্রহণ করা হোক। এদিকে দ্বিতীয় প্রস্তাবের প্রণেতা আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত, যেখানে ভোটাভুটি এড়ানোর জন্য একটি আপস প্রস্তাবের ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে। গত আড়াই সপ্তাহ ধরে চেষ্টা চলছে বলে কূটনৈতিক মহল আশা করছেন যে, পরিষদ দুটো প্রস্তাব গ্রহণ করবে এবং এরপর বিভিন্ন প্রতিনিধি দল সম্পর্কে বক্তব্য রাখবেন।

চীন বসে আছে আবারও ভেটো দেবে

জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সাধারণ পরিষদে যুগোস্লাভিয়ার প্রস্তাবটি  কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না, উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, ‘সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিতে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট গৃহীত হলেও স্বস্তি পরিষদের অনুমোদন ছাড়া কার্যকরী হতে পারবে না। আর স্বস্তি পরিষদে অনুমোদনের জন্য গেলে চীন তাতে ভেটো দেবে।’ ভুট্টো বলেন, ‘আমাদের শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত আমাদের স্বার্থে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বারবার ভেটো দেবে চীন।’ ভুট্টো বলেন, ‘‘পাকিস্তান অপরের কোনোরকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই ‘মুসলিম বাংলার’ সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়।’’

দৈনিক বাংলা, ২৫ নভেম্বর ১৯৭২আবারও স্বাধীনতাবিরোধীদের সাবধান করা হলো

১৯৭২ সালের ২৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ৪০ হাজার শান্তি কমিটির সদস্য ও সাড়ে চার হাজার চোরাচালানকারী গ্রেফতার করেছে। শান্তি কমিটির সদস্য আলবদর রাজাকার অনেকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।’ টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত এক সভায় মন্ত্রী ভাষণদানকালে এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি সব দালাল, শান্তি কমিটির সদস্য ও অতিবিপ্লবীদের বিচার করা হবে বলে আবারও প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।