• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী

আর্থিকখাতের দুর্নীতি বন্ধে ১ বছরে নতুন ১৫ আইন করা হবে-অর্থমন্ত্রী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২১  

আর্থিকখাতের অনিয়ম দুর্নীতি দূর করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আগামী এক বছরের মধ্যে ১৫টি আইন করার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাসের প্রস্তাবের সময় দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সম্পূরক বাজেটে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীদল, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যের সময় দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে আর্থিকখাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।  

ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় তারা বিদেশে টাকা পাচার, পুঁজিবাজারের অব্যবস্থাপনাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সমালোচনা করেন।

তাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে, বন্ধ হচ্ছে। আগের মত অবস্থা নেই। একটার নাম করে আরেকটা আসতো। আগামী ছয় থেকে ১২ মসের মধ্যে ১৫টি আইন দেখতে পারবেন। এগুলো বন্ধ করার জন্য। কারা করে জানি না, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অকার্যকর সিস্টেম জন্য এগুলো হয়। আমরা সংস্কারমুখী কাজ করবো। নতুন নতুন আইন করবো। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেব। কোনো টলারেন্স নেই এখানে। টাকা এখন দেশে আসে।

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, কারা বিদেশে টাকা নিয়ে যায় তা আমার জানা নেই। লিস্ট আমার কাছে নেই। নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করলে আমাদের জন্য সহজ হবে। এখনও অনেকেই জেলে আছে, বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।

এর আগে মঞ্জুরি দাবির আপত্তি জানিয়ে ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, বাজেটের অংকের হিসাব মেলাতে পারছি না। ঘাটতি কোথায়? কোথা থেকে টাকা আনবে? প্রবৃদ্ধির কথা বলছি। করোনাকালীন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে করোনা নিয়ন্ত্রণে। না হলে প্রবাস আয়, গার্মেন্টসখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রবৃদ্ধির জন্য লাফাচ্ছি। সূচের ফোটা দিলে বেলুনের মত চুপসে যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না হলে গার্মেন্টস আর প্রবাস আয় কমে যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না করলে ভয়ানক ধস নামবে।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে আর্থিকখাত ক্ষতিগ্রস্ত। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা জিরোটলারেনন্স। অর্থমন্ত্রী বললেন, অপ্রদর্শিত আয় নিয়ে। এটা সাংঘর্ষিক। দুর্নীতি, মাদক, অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে বিত্ত গড়ে তুললে তাকে সুযোগ দিয়ে ন্যায় করা হবে না। বেহালদশা থেকে জাতি থেকে মুক্ত করতে হলে করোনাকালীন সময়ে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মেগা প্রকল্প বাদ দেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খাতে মঞ্জরি দাবির ছাচাইয়ের প্রস্তাবে ওপর বক্তব্যের সময় হারুনুর রশিদ রাস্তার কাজে বিদেশ থেকে নিম্নমানের বিটুমিন আমদানির সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে নিম্নমানের বিটুমিন আনা হচ্ছে। এতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারা এই নিম্নমানের বিটুমিন আনছেন। এই বিটুমিনের কারণে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইরান থেকে নিম্নমানের বিটুমিন আনা হয় আর সিল লাগানো হয় আরব আমিরাতের। অথচ আরব আমিরাত বিটুমিনই তৈরি করে না। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সংরক্ষিত আসনের বিএনপির সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে পরিবারের হাতে ব্যাংক তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণের টাকার হরিলুট হচ্ছে। সংসদে ঋণখেলাপির তালিকা দেওয়া হলো। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো? বিদেশে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কত টাকা বিদেশে গেছে!

এ সময় তিনি সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের হেনস্তার সমালোচনা করেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আর্থিকখাতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্ব সঠিক। কর্তৃত্ব দুর্বল। ব্যাংকে কর্তৃত্ব নেই। কর্তৃত্ব না থাকলে অবাধে এসব হবে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছে। দুদকের একটি অফিস কানাডায়, মালয়েশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পি কে হালদার এত টাকা নিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট করলে চুরির করার সুযোগ থাকে না। অর্থমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের বসে কি করবেন, দোষ হয় মন্ত্রীর। অডিট করলে টাকা পাচার হয় না। নয় মিনিটের জন্য পি কে হালদারকে ধরতে পারেনি। তাহলে নয় ঘণ্টা আগে ধরতে পারলেন না কেন? একজন সাংবাদিককে হেনস্তা করা হলো কেন? তাকে পুলিশে না দিয়ে ৬ ঘণ্টা আটকে রাখা হলো কেন? তাকে টয়লেটেও যেতে দেওয়া হয়নি।

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ব্যাংকিংখাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্যাতিত এতিমদের মত, দেখার কেউ নেই। লুটপাট হচ্ছে। দুর্নীতি হচ্ছে, কিছুই হয় না। শাস্তি হয় না। তিনিও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের হেনস্তার সমালোচনা করেন।