• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আগামীকাল ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির আহতদের চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের ভিসা অনুমোদনের সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সার্বিক কৌশল নিতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বান

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  

চতুর্থ জোট নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রো-এশীয় এবং লাতিন আমেরিকার বরেণ্য নেতাদের বিপুল করতালির মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ক্ষুধা-দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা ও বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য জোট নিরপেক্ষ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোকে তাদের সম্পদ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশে বার্তাসংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি এক তারবার্তায় আরও জানান- প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু বলেছেন, জোট নিরপেক্ষ দেশগুলো যেসব সাধারণ সমস্যায় আছে সেগুলোর সমাধানে বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এই সম্মেলনে একটি সার্বিক কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

একক বা সমষ্টিগতভাবে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তার সমাধানের জন্য নিরপেক্ষ দেশগুলোর মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও ফলপ্রসূ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কর্মতৎপরতা গ্রহণ করতে হবে বলে এদিন উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু বলেন, জোট নিরপেক্ষতা বলতে আমরা বুঝি নির্যাতিত বিশ্বের প্রগতিশীল শক্তির সঙ্গে সংহতি। জোট নিরপেক্ষতা বলতে বুঝি পৃথিবীর সেই নির্যাতিত মানুষের সঙ্গে একাত্মতা, যারা তাদের জাতীয় মুক্তির জন্য এবং শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তির সংগ্রামে লিপ্ত আছে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘তৃতীয় বিশ্ব’ শব্দটি বলে প্রকৃত বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়া হয়। বাস্তবতা হলো আজকের দুনিয়া দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক ও শোষিত।

2

জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, এশিয়া আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার জনগণের জাতীয় মুক্তির জন্য যারা সংগ্রামে লিপ্ত— বাংলাদেশ সবসময় তাদের পাশে থাকবে। আলজেরিয়া, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধু।

ঐতিহাসিক ভাষণে এখনও এলাকা দখল করে রাখা এবং মোজাম্বিক, নামিবিয়ার জনগণের মুক্তির সংগ্রাম এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ
জোট-নিরপেক্ষ সম্মেলনের রাজনৈতিক ঘোষণায় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দানের আহ্বান জানিয়ে সুপারিশ করা হয়। রাজনৈতিক ঘোষণা কমিটিতে চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে। অন্যদিকে সম্মেলনে অর্থনৈতিক আরেকটি সনদ অনুমোদন হয়। এতে যে কোনও দেশের কাঁচামাল প্রাকৃতিক সম্পদ ও শিল্প জাতীয়করণের অধিকার ঘোষিত এবং আন্তর্জাতিক করপোরেশনগুলোর তৎপরতাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা হয়।

শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপ কী হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়। পরে শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত অধিবেশনে একটি আপস ফর্মুলা গৃহীত হয়েছে। তাতে স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়।

মুহুর্মুহু করতালি জোটনিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে এদিন সকালের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের সময় সম্মেলনকক্ষে অভূতপূর্ব গাম্ভীর্য নেমে আসে। বিশ্বের বরেণ্য নেতাদের মধ্যে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, কিউবার প্রধানমন্ত্রী ফিদেল কাস্ত্রো, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে আফ্রো-এশীয় লাতিন আমেরিকার নেতারা করতালিতে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। তারা এগিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে করমর্দনও করেন।

1

ভারত-পাকিস্তান চুক্তিতে সন্তোষ
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর উদ্ভূত মানবিক সমস্যার সমাধানকল্পে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত ভারত-পাকিস্তান চুক্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় সম্মেলনে। এ চুক্তি উপমহাদেশের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। যেসব আরব দেশ জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছে সেগুলো হচ্ছে কুয়েত, সৌদি আরব, জর্ডান ও মৌরিতানিয়া।

শান্তি নিশ্চিত নয়
খসড়া ঘোষণার দলিলে বলা হয়, শান্তি এখনও নিশ্চিত নয়। দেখা যাচ্ছে ইন্দোচীনে প্যারিস চুক্তি ও কম্বোডিয়ায় বোমাবর্ষণ বন্ধ হলেও শান্তি আসেনি। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থার অবনতি ঘটেছে। আফ্রিকায় নতুন করে উপনিবেশবাদী যুদ্ধ শুরু হয়েছে। লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব অনিরাপত্তার বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত বেড়েছে। ঘোষণায় উপনিবেশবাদ এবং দরিদ্র দেশগুলোর ব্যবধানের নিন্দা জানানো হয়। ঘোষণায় বলা হয়, যতদিন উপনিবেশবাদ ও বর্ণ বৈষম্য থাকবে, অর্থনৈতিক শোষণ-লুণ্ঠন থাকবে- ততদিন শান্তি, সম্ভাবনা, নীতির বিস্তার সীমিত হবে।