• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

অশান্ত হয়ে উঠছে পার্বত্য অঞ্চল: নেপথ্যে বিদেশিদের হাত

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২৪  

গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পার্বত্য এলাকায় উপর্যুপরি তিনটি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। গত রাতে বান্দরবানের রুমার পর আজ থানচি উপজেলা শহরের সোনালী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি হয়েছে। আর এই ডাকাতির সঙ্গে রুমায় নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) জড়িত বলে জানা গেছে। কেএনএফ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় ট্রেন কেএনএফ। তারা টাকা এবং ১৪টি অস্ত্র লুট করে। আজ দিন দুপুরে বেলা একটার দিকে থানচি সদর উপজেলা উপজেলায় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংকে একই গোষ্ঠী অভিযান চালায় এবং ডাকাতি করে।

জানা গেছে যে, বেলা একটার দিকে থানচি সদরে  সাজাদপুর দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে করে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় প্রবেশ করে। এরপর থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংকের ভিতরে ঢুকে নগদ টাকা যা পেয়েছে তা নিয়ে তারা চলে গেছে। এরপর আবার ওই তিন গাড়িতে করে তারা সাজাদপুর দিকে চলে যায়।

গত কিছুদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলে অশান্ত হয়ে উঠছে এবং পার্বত্য অঞ্চলে অশান্ত হওয়ার পিছনে মিয়ানমারের সহিংস পরিস্থিতি জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করছেন। নতুন করে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কেএনএফ এর সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীদের যোগাযোগের খবর পাওয়া গেছে এবং কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট এর সঙ্গে চীনের সম্পৃক্ততারও প্রমাণ পাওয়া যায়। কেএনএফ এর বিভিন্ন লিফলেটে তারা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক এবং চীনকে তাদের আদর্শ হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে কুকি-চিনের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীদের যোগাযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত একাধিক তথ্য প্রমাণও পাওয়া গেছে। অন্যদিকে মিয়ানমারের যে সমস্ত গোষ্ঠীরা এখন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করছে, মিয়ানমারের সঙ্গে পৃথক অবস্থান ঘোষণার জন্য চেষ্টা করছে তাদের সঙ্গেও কুকি-চিনের সম্পর্ক রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলকে অশান্ত করে একটি নতুন বিশ্ব পরিস্থিতি তৈরি করার কোন চেষ্টা চলছে কিনা তা ব্যাপারে এখনই সতর্ক নজরদারি প্রয়োজন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ আরাকান আর্মি মিয়ানমারের রাখাইন অংশে তাদের নিজেদের স্বাধীন সত্তা ঘোষণার চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে পার্বত্য অঞ্চলকে অশান্ত করারও কোন নীল নকশা থাকতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। আর পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বিগ্ন করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চল শান্ত ছিল। বিশেষ করে ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তির পর সেখানে আস্তে আস্তে একটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আবার বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের অবস্থান এখানে নতুন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। আর এ কারণেই এখন মনে করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে আবার সামরিক হস্তক্ষেপ বাড়ানো দরকার। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি সেখানে বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। না হলে সামনের দিনগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় তিনটি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা তার একটি আলামত বলে অনেকে মনে করেন।