• রোববার ১২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৯ ১৪৩১

  • || ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:

প্রথমবারের মতো যুদ্ধ বন্ধের আগ্রহ দেখালো ইসরায়েল

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৪  

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের ছাড়িয়ে নিতে ‘জিম্মি চুক্তির’ নতুন প্রস্তাব দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট এক্সিওস শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাদের দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর ‘গাজায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে’ অর্থাৎ যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে আগ্রহী রয়েছেন তারা।

এছাড়া হামাসের কিছু দাবি মেনে নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা। যার মধ্যে অন্যতম হলো সাধারণ গাজাবাসীকে তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দেওয়া হবে। গাজার মাঝে দিয়ে তৈরি নতুন করিডোর থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর ‘জিম্মি চুক্তির’ অংশ হিসেবে এবারই প্রথমবারের মতো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার আলোচনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে ইসরায়েল।

জিম্মি চুক্তি করতে ইসরায়েলকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার দাবি জানিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, জিম্মি চুক্তি করতে হলে অবশ্যই গাজায় হামলা ও বর্বরতা বন্ধ করতে হবে।

মিসরের গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল গত শুক্রবার ইসরায়েলে যায় এবং তারা দখলদার ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা সিন বেত, প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে জিম্মি চুক্তি এবং রাফাহতে ইসরায়েলি সেনাদের সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে আলোচনা করেন।

ওই আলোচনা শেষে মিসরের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা হামাসের কাছে নতুন একটি প্রস্তাব পৌঁছে দেন। ওই প্রস্তাবে রয়েছে চুক্তির জন্য ইসরায়েল আরও ছাড় দিতে রাজি আছে।

শনিবার সকালে হামাস এক বিবৃতিতে জানায় তারা ইসরায়েলের কাছ থেকে নতুন প্রস্তাব পেয়েছে এবং এটি বিশ্লেষণ করে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট এক্সিউসকে জানিয়েছেন, নতুন প্রস্তাবটি যৌথভাবে প্রস্তুত করেছেন মিসর ও ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা। এতে তারা হামাসের দাবি-দাওয়াগুলো বিবেচনায় নিয়েছেন এবং কোন কোন দাবি মেনে নেওয়া যায় সে ব্যাপারে কথা হয়েছে।

ইসরায়েল— হামাসের কাছে যে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, চুক্তির দ্বিতীয়ধাপে গাজায় স্থিতিশীলতা (যুদ্ধবিরতি) ফিরিয়ে আনা হবে। যেটি প্রথম ধাপের পর হবে।

ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা আশা করি হামাসকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনতে আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা আশা করি তারা বুঝতে পারবে আমরা সত্যিকার অর্থে চুক্তি চাই— এবং আমরা এ ব্যাপারে সিরিয়াস। তাদের বুঝতে হবে যদি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হয় আমরা পরবর্তী ধাপে যেতে পারব এবং যুদ্ধের শেষে পৌঁছাতে পারব।”

ইসরায়েলি কর্মকর্তা আরও বলেছেন, “ইসরায়েল বিশ্বাস করে যে হামাস জানে যে তারা রাফাহতে হামলা চালাতে পারে। আর এই বিষয়টি চুক্তির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।”

হামাসের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলের জিম্মি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। ইসরায়েল দাবি করেছিল চুক্তির প্রথম ধাপে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ৪০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। তবে হামাস কয়েকদিন আগে জানিয়েছে তারা এখন এরকম ২০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে পারবে। ইসরায়েল প্রথমে এটি মানতে না চাইলেও এখন কিছুটা নমনীয় হয়েছে। তারা বলেছে চুক্তির প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দিলে তারা এটি মেনে নেবে। এ ব্যাপারে ইসরায়েলর যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভাও সায় দিয়েছে।

যে বিষয়টির ওপর এখন সবার নজর: ইসরায়েলিরা এখন হামাসের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে। ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের নতুন প্রস্তাবের ব্যাপারে কি উত্তর দেয় এখন সবার নজর এটির ওপর। ধারণা করা হচ্ছে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামাস এ ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে।