• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

নলকূপে পানির বদলে উঠছে গ্যাস, তাতেই রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি-খিচুড়ি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৩  

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে পাওয়া গেছে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান। নলকূপ স্থাপনের জন্য ৬০-৬৫ ফুট খনন করার পরই পানির বদলে উঠতে থকে গ্যাস।  শুধু তাই নয়, নলকূপের জন্য তৈরিকৃত গর্ত থেকে বের হওয়া গ্যাসে আগুন জ্বালিয়ে বিরিয়ানি, খিচুড়ি ও ডিম ভাজি রান্না করে খাচ্ছেন গ্রামবাসী। এমন ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৪ নভেম্বর দুপুরে উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ মাথাভাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, ওই স্থানে গ্যাসের মজুদ রয়েছে কি না তা জানতে ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন।
 
জানা যায়, গত ৪ নভেম্বর সকালে কৃষিজমিতে পানি সরবারহের জন্য জমির এক পাশে নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করেন আবু সালাম বেপারী। শ্রমিকরা ৪০ ফুট পাইপ মাটির ভেতর ঢুকিয়ে দিলেও পানির দেখা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন আবু সালাম বেপারীসহ কর্মরত শ্রমিকরা।

পরে আরো ২৫ ফুট পাইপ স্থাপনের পরেও পানি না পেলে তারা অন্যত্র নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করেন। এর একদিন পরে নলকূপ স্থাপনের জন্য করা গর্ত থেকে বুঁদ বুঁদ শব্দ শোনা যায়। বুঁদ বুঁদ শব্দ আর গ্যাসের গন্ধে চারপাশ ভরে গেলে স্থানীয় একজন দিয়াশলাই দিয়ে গর্তের মুখে ধরলে আগুন জ্বলতে থাকে। এরপর বিষয়টি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীরা ওই গর্তের মুখে অস্থায়ী চুলা বসিয়ে ডিম ভাজি, বিরিয়ানি ও খিচুড়ি রান্না করতে শুরু করেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়।

নলকূপ স্থাপন করতে আসা শ্রমিক ফারুক হোসেন বলেন, যখন পানি ওঠানোর জন্য টিউবওবলের পাইপ স্থাপন করছিলাম তখন পানি উঠছিল না, পানি শুধু নিচের দিকে যাচ্ছিল। পাশেই আরেকটা জায়গায় নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করি। পরে দেখি প্রথমে যে স্থানে নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করেছিলাম সেই স্থানের গর্ত দিয়ে বুঁদ বুঁদ শব্দ করে গ্যাস উঠছে।

আবু সালাম বেপারী বলেন, নলকূপের জন্য করা গর্ত থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী সেখানে অস্থায়ী চুলা স্থাপন করে রান্না করছে। উৎসুক জনতা এই গ্যাস দিয়ে রান্না করলেও বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ইউপি চেয়ারম্যানসহ মেম্বারকে বিষয়টি জানিয়েছি।

কাঁচিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, গ্রামবাসী নূলকূপ থেকে বের হওয়া গ্যাসে রান্না করছে। কিন্তু যে স্থানটিতে গ্যাস বের হয়েছে। সেই স্থানটি পনের বছর আগেও পদ্মা নদীর অথৈ পানির নিচে ছিল। এই অল্প কয়েক বছর আগে চর জেগে ওঠা স্থানে গ্যাস থাকার কথা নয়। আমার মনে হচ্ছে অন্য কোনো কারণে এমন গ্যাস বের হচ্ছে। তারপরও নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাস বের হওয়ার ঘটনা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা লিখিতে আকারে পেট্রোবাংলাকে জানিয়েছি। আশা করি, এ বিষয়ে ওনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।