• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে

গিবতের ভয়াবহতা, না করার উপকারিতা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪  

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা গিবতের ভয়াবহতা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলেছেন, ‘আর তোমরা একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাবে। নিশ্চয়ই তোমরা এটাকে অপছন্দ করবে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চই আল্লাহ তাআলা সিমাহীন ক্ষমাকারী এবং দয়ালু’। (সূরা: হুজরাত, আয়াত: ১২)
হাদিস শরিফে গিবতের ভয়াবহতা

বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ব্যভিচার করার পর মানুষ আল্লাহর কাছে তওবা করলে আল্লাহ তাআলা তওবা কবুল করেন। কিন্তু গিবতকারী ব্যক্তিকে যে পর্যন্ত ওই ব্যক্তি (যার গিবত করা হয়েছে) ক্ষমা না করে; ততোক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না’। (মিশকাত)

অপর এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি তার দুই চোওয়ালের মাঝের অঙ্গ (মুখ) এবং দুই রানের মধ্যবর্তী অঙ্গ (লজ্জাস্থান) হেফাজতের দায়িত্ব নেবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নেব’। (সহিহ বুখারি, হাদিস, ৬১০৯)

এজন্য গিবত থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। যে ব্যক্তি গিবত থেকে নিজেকে রক্ষা করবে, সে বিশেষ কিছু উপকার পাবে। এখানে গিবত থেকে বেঁচে থাকার কিছু উপকার তুলে ধরা হলো-

গিবত থেকে বেঁচে থাকার উপকার

> গিবত করা মুসলমানের গোশত খাওয়ার সমতুল্য অপরাধ। যে ব্যক্তি গিবত থেকে বেঁচে থাকে সে এই জঘন্য পাপ থেকে রক্ষা পাবে।

> জেনা করার থেকে মারাত্মক গিবত করা। যে ব্যক্তি গিবত ত্যাগ করলো সে এই মারাত্মক পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করলো।

> গিবতের কারণে রোজার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও নষ্ট হয়ে যায়। যে ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকে সে নিজের রোজাকে হেফাজতের চেষ্টা করে থাকে।

> গিবতের কারণে ওজু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। হানাফি মাজহাব মতে কোনো ব্যক্তি ওজু করার পর গিবত করলে বা মিথ্যা বললে আবারো নতুন করে ওজু করা উচিত।

ইব্রাহিম নাফাঈ (রহ.) বলেন, দুটি কারণে ওজু নষ্ট হয়। ১. পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে। ২. কোনো মুসলমানকে কষ্ট দিলে। (বায়হাকী)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা বলেন, ঘুমের কারণে যেভাবে ওজু নষ্ট হয়, ঠিক একিভাবে মিথ্যাচার ও গিবতের কারণেও ওজু নষ্ট হয়। (দুররে মানসুর)

তাই যে ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকলো সে নিজের ওজুকে রক্ষা করলো। আর ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ ও  কোরআন স্পর্শ করে তেলাওয়াতের জন্য ওজু আবশ্যক। ওজু ছাড়া এই ইবাদতগুলো পালন করা যায় না।

> পবিত্র  কোরআনে গিবতকে হারাম বলা হয়েছে। তাই কোনো ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকলে হারাম কাজ অর্থাৎ, কবিরা গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে বেঁচে গেল।

> গিবতের মাধ্যমে অন্যকে আঘাত করা হয়। সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেছেন, আমি কোনো ব্যক্তির গিবত করার থেকে তাকে তীর দিয়ে আহত করাকে সহজতর অপরাধ মনে করি। তাই যে ব্যক্তি গিবত ত্যাগ করলো সে অন্যকে আহত করা থেকে বিরত থাকলো।

> যে ব্যক্তি নিজের বাকশক্তি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্যের গিবত করে বেড়ায়, সে মানুষের কাছে অপমানিত হয়। তাই গিবত থেকে বিরত থাকলে নিজেকে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।

> গিবত থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে নিজের অন্তরকে পরিচ্ছন্ন ও নির্মল রাখা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিন যখন কোনো গুনাহে রকাজ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়’। (ইবনে মাজা)

তাই গিবত থেকে বেঁচে থাকলে অন্তরে দাগ পড়া থেকে বেঁচে থাকা যায়। এতে করে অন্তর স্বচ্ছ থাকে।

> যে ব্যক্তি অন্যের গিবত করে না, সে কেয়ামতের দিন লজ্জিত ও অপমানিত হবে না। কারণ, সে মানুষের মান-সম্মানে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থেকেছে।

ইয়া আল্লাহ! আমাদের সবাইকে গিবত করা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।