• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শরীয়তপু‌রে বিএন‌পি শুধু ফেসবুকে, নেই মাঠে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২১  

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাক‌লেও নেতাদের শুধু ফেসবুকে পাওয়া যায়। মাঠে নেই তাদের রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রম।

জেলা কার্যালয়টিও বন্ধ র‌য়ে‌ছে দীর্ঘ ৬ বছ‌রের বে‌শি সময় ধ‌রে। দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন ক‌রছে না সহ‌যো‌গী সংগঠ‌নের নেতাকর্মীরাও। তাদের মধ্যে আবার সু‌বিধাবাদী কিছু নেতাকর্মী দুর্দিনে দলের পা‌শে না থে‌কে ঘুরছেন অন্য দলের নেতাদের পিছে পিছে।

বিএন‌পির জেলা ক‌মি‌টির শীর্ষ প‌দধারী কিছু নেতা মাঠে না থে‌কে বি‌ভিন্ন কর্মসূ‌চি পালন ক‌রেন ফেসবু‌কে। ত‌বে ন‌ড়িয়া উপ‌জেলার ঘ‌ড়িষার ইউ‌নিয়‌নে মা‌ঝে ম‌ধ্যে কিছু কর্মসূ‌চি পালন কর‌তে দেখা গে‌ছে।

জেলা বিএনপির নেতাকর্মী‌দের বি‌ভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের মে মাসে ঢাকায় বসে জেল‌ার ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতার স্থান হয়‌নি। ক‌মি‌টি‌তে বে‌শিরভাগ পদ-পদবি দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে ফায়দা নেয়ার অভিযোগ র‌য়ে‌ছে শীর্ষ নেতাদের বিরু‌দ্ধে। ক‌মি‌টি‌তে স্থান পাওয়া বে‌শিরভাগ নেতা এলাকায় আসেন না।

অনেকেই আবার ইউনিয়নের নেতা হওয়ার যোগ্য না হলেও তাদেরকে জেলা কমিটির পদ-পদবি দেওয়া হয়েছে ব‌লে অভি‌যোগ র‌য়ে‌ছে। ফলে সমর্থকরা ‌বিএন‌পি ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন।

এরই ম‌ধ্যে শরীয়তপুর জেলা বিএনপি কয়েক‌টি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। এরম‌ধ্যে একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালু। অপর একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জামাল শরীফ হিরু এবং আরো একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী কারাবন্দি মিয়া নুরুদ্দিন অপু।

একটি গ্রুপের সমর্থকরা মাঝে মধ্যে ধানুকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে এক নেতার বাড়ির বাগানে বসে দুই এক‌টি কর্মসূচি পালন করেন। অপর একটি গ্রুপ কর্মসূচি পালন করে পালং উত্তর বাজার পৌর বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে একটি বাড়ির আঙিনায়। এছাড়া অন্য একটি গ্রুপ কর্মসূচি পালন করে সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে। এ কারণে জেলার যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন, পদ-পদবি পাওয়া নেতারা এলাকায় না থাকা, অযোগ্য লোকদের নেতা বানানোর কারণে এবং দলীয় কার্যালয়‌টি বন্ধ থাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

পাশাপা‌শি তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও অভিযোগ, জেলা বিএনপির পক্ষ থে‌কে তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না, যা হয় তা শুধু ফটোসেশনের কর্মসূচি।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ বলেন, গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলের কোনো কর্মসূচিতেই আসেনি। নেতাকর্মীদের কোনো খোঁজখবর নেয়নি শীর্ষ‌নেতারা। এ জন্য জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি চাই।

ন‌ড়িয়া উপ‌জেলা যুবদ‌লের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ম‌তিউর রহমান সাগর ব‌লেন, ন‌ড়িয়াতে যুবদ‌লের অন্যান্য নেতারা দলীয় কোনো কর্মসূ‌চি পালন ক‌রে ব‌লে আমার জানা নেই।

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জামাল শরীফ হিরু বলেন, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির কমিটি গণতান্ত্রিকভাবে করা হয়নি। যোগ্য নেতাদের ক‌মি‌টি‌তে স্থান না হওয়ায় কর্মসূ‌চি থে‌কে তারা বিরত থা‌কেন।