• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

শরীয়তপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ সম্পন্ন, ৩ চাষী পুরস্কৃত 

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২২  

শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে  জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান  অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এ বছর মৎস্য চাষে বিশেষ অবদানের জন্য জেলার  ৩ চাষীকে  পুরস্কার প্রদান করা হয়।

শনিবর (৩০জুলাই) সকাল ১১টায় জেলাপ্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে  অনুষ্ঠিত হয় সমাপনি অনুষ্ঠান। 

জেলা মৎস্য অফিসার প্রণব কুমার কর্মকার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলাপ্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাজী শরিফুল ইসলাম,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ গোলাম রাশুল। বক্তব্য রাখেন দৈনিক হুংকার এর নির্বাহী সম্পাদক এম হারুন অর রশীদ, সফল মৎস্য চাষী হাজি ফিরোজ হোসেন খান, গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য চাষী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান, দেশীয় মৎস্যচাষী আঃ রহিম খান।

২০২১-২২ অর্থবছরে কার্পমাছ চাষের জেলা পর্যায়ে শেষ্ঠত্ব অর্জন  ভেদরগঞ্জ উপজেলার হাজি ফিরোজ হোসেন খান, হেচারী মাছের জন্য গোসাইরহাটের আবদুর রহিম খান ও সদর উপজেলার অসীম দত্ত।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই থেকে সংবাদ সম্মেলন  র‍্যালি, পোনা মাছ অবমুক্তকরণ ও আলোচনা সভার মাধ্যমে শরীয়তপুর  জেলা সদরসহ অপর ৫ উপজেলা সদরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন জেলাপ্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান। 

 মৎস্য সপ্তাহের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, জলাশয়ের মাটি ও পানি পরীক্ষা, মৎস্যচাষীদের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য ছিলো।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলাপ্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান বলেন,  মাছ বাঙালি জাতির সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অংশ। দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যবিমোচন ও রপ্তানি আয়ে মৎস্য খাতের অবদান আজ সর্বজনস্বীকৃত। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৫০ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে ২৫.৭২ শতাংশ। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যে প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে মাছ থেকে। দেশের প্রায় ১৪ লাখ নারীসহ মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। দেশের মানুষ গড়ে জনপ্রতি প্রতিদিন ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ বর্তমানে গ্রহণ করছে।

দেশে উৎপাদিত মোট মাছের পরিমাণ ৪৩.৮৪ লাখ মেট্রিক টন, যা ২০০৮-০৯ সালের মোট উৎপাদনের চেয়ে ৬২.৩১ শতাংশের বেশি। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, (২০২০) মিঠাপানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান ২য়, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বিশ্বে ৩য় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১ম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ। দেশ এখন মাছে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই না, উদ্বৃত্তও বটে। এ অর্জন জাতির জন্য গৌরব এবং অহংকারের।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করে মৎস্য চাষকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেয়ার শুভ সূচনা করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন ‘মাছ হবে এ দেশের দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ।’ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে মৎস্যবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজ সফল হয়েছে। দেশ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষ স্বল্পমূল্যে মাছ ও পুষ্টি পাচ্ছে। 

আমাদের মাছের মোট উৎপাদনের শতকরা ১৬ ভাগ (৬.৫৯ লাখ মেট্রিক টন) সামুদ্রিক মাছের অবদান। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিমি.এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সমুদ্রে স্থায়ীত্বশীল মৎস্য আহরণের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

 পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৮-২০০৯ সালে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-১৯ সালে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ গত ১২ বছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। গত ২০১৬ সালে ইলিশ বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইলিশের স্বত্ব এখন শুধুই বাংলাদেশের। এটা জাতির জন্য গৌরবের।