• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

শরীয়তপুর বার্তা

মিষ্টি কিনতে গিয়ে ৯০ হাজার জাল টাকাসহ শিশু আটক

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২  

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার অভিযান চালিয়ে এ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত টাকাগুলো এক হাজার টাকার নোট দ্বারা বান্ডিল করা ছিল।
জানা যায়, এ টাকার মালিক উপজেলার রাজীবপুর ইউপির বৃ-দেবস্থান গ্রামের মো. কাশেম মিয়া নামে এক ব্যক্তির। তার ঘর থেকে কিছু জাল টাকা নিয়ে শনিবার সকালে ওই বাড়ির দুই শিশু ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরে যায়। তারা শহরের সিলভার পট্টির এক মিষ্টির দোকান থেকে কিছু মিষ্টি কিনে দোকানিকে এক হাজার একটি নোট দেয়। শিশুদের হাতে এক হাজার নোটের বান্ডিল দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজনের মনে সন্দেহ দেখা দিলে তাদের আটকে রেখে থানায় খবর দেয় ব্যবসায়ীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ শিশু দুটিকে নিয়ে জড়িতদের ধরতে কাজ করতে অভিযান শুরু করে।

একপর্যায়ে শিশুদের নিয়ে পুলিশ বৃ-দেবস্থান গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য পেয়ে তাদের নানা কাশেম মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে পুলিশ। কিন্তু বাড়ির লোকজন জাল টাকার ঘটনা শুনে তারা কিছুই জানে না বলে জানায়। তাদের এমন অবস্থা দেখে পুলিশ ঘরে প্রবেশ করে একটি বড় ট্র্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ উদ্ধার করে। ওই কাগজগুলোতে টাকার নোটে নিরাপত্তা সুতার মতো দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। একপর্যায়ে বাড়ির মালিক কাশেম ও শিশু দুটিকে একটি ঘরে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো. আশরাফুল একটি চালাঘরে ঢুকে বালি খুঁড়ে একটি ব্যাগ উদ্ধার করেন। ব্যাগটি খুলে ভেতরে থাকা ২৪টি এক হাজার টাকা নোটের বান্ডিল উদ্ধার করে। একেকটি বান্ডিলে একশ করে এক হাজার টাকার নোট ছিল। অন্যদিকে শিশুদের হাত থেকে ৯০টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ আরেকটি ঘরের সিলিং তল্লাশি করে নিরাপত্তা সুতার মতো দেখতে দুই বান্ডিল রঙিন কাগজ উদ্ধার করে।

তবে পুলিশ তল্লাশি চলানোর সময় কাশেম মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম পালিয়ে যান। অন্যদিকে তল্লাশি চলার সময় বাড়ির একটি কক্ষে আটক ছিলেন কাশেম মিয়া। তার কাছে বাড়িতে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ও নোট তৈরির নানা উপকরণ থাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। এসব উপকরণ কে এনে রেখেছে জানতে চাইলেও তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

জানা যায়, কাশেম মিয়ার তিন ছেলে ও ছয় মেয়ে। বড় ছেলে ডালিম মিয়া বেকার জীবনযাপন করেন। তিনি বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। পুলিশ তার খোঁজে কয়েকদিন পর পর বাড়িতে আসে। এ কারণে তিনি পলাতক থাকেন। অন্যদিকে এক মেয়ের জামাইয়ের নাম মো. সেলিম মিয়া। তিনি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউপির ডুমরি গ্রামের আবদুল আজিজের পুত্র। সেলিম মিয়া কয়েক মাস আগে ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। গত দুইদিন আগে সেলিম শ্বশুর বাড়ি থেকে একটি বস্তা নিয়ে গেছেন। শিশুদের দেওয়া তথ্য ও শ্বশুরবাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রামের লোকজন ধারণা করছেন সেলিম তার শ্বশুর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা সরিয়ে নিয়েছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, দুটি শিশুকে ধরার পর ওদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযান শেষে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।