• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

কুড়িগ্রাম হবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪  

প্রায় এক দশক আগের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে যাচ্ছে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। যেখানে ভুটানের বিনিয়োগে গড়ে উঠবে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম। পাশাপাশি আঞ্চলিক নেটওয়ার্কেও এগিয়ে থাকবে দেশ। বিশ্লেষকদের মতে, যৌথ বিনিয়োগের এই প্রকল্পের সূত্র ধরেই শুধু ভুটান নয়, ভবিষ্যতে চীনা পণ্য রফতানিতেও করিডোর হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে বাংলাদেশ।

জানা যায়, ৯ বছর আগে, কুড়িগ্রামের বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করতে গেলে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রথমবারের মত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল কুড়িগ্রামবাসী। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে সদর উপজেলায় ধরলা নদীর পাড় ঘেঁষে। কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পাশে ১৯০ একর জায়গায় বাংলাদেশ-ভুটানের যৌথ বিনিয়োগে গড়ে উঠবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। যেখানে পণ্য উৎপাদন করে তা রফতানি হবে ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে। সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নাময়িগেল ওয়াংচুক প্রকল্প এলাকাটি নিজে দেখে, ওই পথেই ফিরে যাবেন থিম্পুতে।

কেন এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে ভুটান? কারণ, কুড়িগ্রাম থেকে দেশটির সবচেয়ে কাছের শহর ফুন্টশোলিং এর দূরত্ব মাত্র ১৫৭ কিলোমিটার। অন্যদিকে গেলেফুর দূরত্ব ১৯১ কিলোমিটার আর রাজধানী থিম্পু বাংলাদেশে থেকে মাত্র ৩০৩ কিলোমিটার দূরে। কুড়িগ্রামের সোনাহাট ও রৌমারী স্থলবন্দর এবং চিলমারী নৌ-বন্দরের সঙ্গে ভুটানের যোগাযোগ সুবিধা রয়েছে।

তাই এখানে পণ্য উৎপাদন করে তা রফতানি যেমন সহজ হবে, তেমনি স্থায়ী যোগাযোগ স্থাপিত হলে, মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন ট্রানজিট অ্যান্ড প্রটোকল চুক্তির আওতায় ভুটানেরও সহজ হবে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। আঞ্চলিক রুটের সুবাদে যা পরবর্তীতে চীনা পণ্য পরিবহনেও বিস্তৃত হবার সুযোগ আছে।

চারদিকে স্থলবেষ্টিত বা ল্যান্ড লক কান্ট্রিখ্যাত ভুটান এসব কারণেই আগ্রহী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে। সেই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে দেশটি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েলের বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ভুটানও পরিষ্কার করেছে, গেলেফুর সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। ঐক্যবদ্ধ আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক গড়তে তারা বদ্ধপরিকর।

শুধু তাই নয়, বিদ্যমান চুক্তির আওতায় উত্তরবঙ্গের বন্দরগুলো ব্যবহারে প্রতিবেশী দেশগুলোকে টানতে চায় বাংলাদেশ। যার ইঙ্গিত গেলো বছরের আগস্টে রংপুরে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত বছর লন্ডন সফরের সময় ভুটানের রাজাকে বিনিয়োগের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই প্রতিফলন এবার সফর করে দিয়ে গেলেন জিগমে খেসার। অর্থাৎ, কুড়িগ্রাম-ভুটানের সংযোগে অর্থনৈতিক কূটনীতির পাশাপাশি ভারতের সেভেন সিস্টার্স-খ্যাত অঞ্চলগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের সবচেয়ে গরিব জেলার অপবাদ ঘুচবে বলে আশা সেখানকার মানুষের। কুড়িগ্রামে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সফরের মধ্যে দিয়ে যুগান্তকারী নতুন দিনের সূচনা হবে। প্রতীক্ষা উত্তরাঞ্চলবাসীর।