• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
সেনাবাহিনীকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছে ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কাজ করতে মন্ত্রী-এমপিদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সরিয়ে তারা কাকে আনবে? যে ২৫ জেলায় আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি আওয়ামী লীগ দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ৩ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী

এক সেতুতে বদলেছে ৩০ লাখ মানুষের ভাগ্য

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৩  

একটি সেতু বদলে দিয়েছে অনেক কিছু। সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম সেতু সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ কুশিয়ারা নদীর ওপর স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতু নির্মিত হওয়ায় জেলার ৩০ লাখ মানুষের ভাগ্য বদলেছে।
সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমেছে। সময় বেঁচেছে ৩ ঘণ্টা। যাতায়াতের ক্ষেতে মানুষ ও পণ্য পারাপারে খরচ কম লাগছে। শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারায় লেখাপড়ায় এগিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো সময় যানচলাচলের কারণে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে ঐ অঞ্চলের মানুষ। মূলত এই একটি মাত্র সেতু বদলে দিয়েছে এই অঞ্চলের জীবনমান।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সুনামগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল কুশিয়ারা নদীর ওপর রানীগঞ্জ সেতু নির্মাণের। যা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাস্তবায়ন করলো বর্তমান সরকার। সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় সুনামগঞ্জ জেলাশহর থেকে রাজধানী ঢাকাতে পৌঁছাতে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পথ কমেছে। সময় বেঁচেছে কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা। এই সেতুটি ঘিরে নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনায় বিভোর এলাকাবাসী। পাশাপাশি সেতুটি সুনামগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে জানান জেলাবাসী।

রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজি এখলাছুর রহমান আখলাই জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আমাদের প্রাণের দাবি ছিল কুশিয়ারা সেতুর ওপর রাণীগঞ্জ সেতু নির্মাণের। অনেক সরকার অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার তা বাস্তবায়ন করেছে। আগে সুনামগঞ্জ বা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া আসা করতে গেলে এই নদী পারাপার নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে  হতো। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের পর এলাকার সর্বস্তরের মানুষের ভোগান্তি কমেছে। স্বস্তি এসেছে জনমনে।

রাণীগঞ্জ ইউনিয়ণের আছিমপুর গ্রামের গৌছ আলী জানান, সেতু নির্মাণের আগে রাত-বিরাতে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে, যাতায়তের অভাবে দ্রুত ডাক্তার বা হাসপাতালে নেয়া যেত না। দেখা যেত নৌকার অভাবে ভালো রোগীও মুমূর্ষু হয়ে যেত। সেতুটি হওয়ায় যখন তখন হাসপাতাল কিংবা ডাক্তার নিয়ে যাওয়া যায়।

জগন্নাথপুর স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী  জানায়, আগে বাসা থেকে বের হয়ে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছানো যেত না। সেতুটি হওয়ায় সঠিক সময়ে বাসা থেকে বের হয়ে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেয়া যায়।

সুনামগঞ্জের মাইক্রোবাসচালক সমীর মিয়া জানান, আগে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যেতে গেলে রাণীগঞ্জ সেতুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকা লাগতো। এতে সময় ও টাকা দুটোই বেশি লাগতো। কিন্তু সেতুটি হওয়ার পর ২-৩ ঘণ্টা সময় কম লাগছে। সেইসঙ্গে গাড়িতে তেল বা গ্যাস কম লাগছে।

রানীগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তাদীর আহমদ জানান, এই সেতুটি সুনামগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখছে। রানীগঞ্জ সেতু নির্মাণের ফলে ঢাকাসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা হয়েছে। তাছাড়া আশপাশে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। যা এলাকার মানুষের বেকারত্ব নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশকান্দি (আব্দুস সামাদ আজাদ) আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর ওপর রানীগঞ্জ সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট। ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু ও আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং টুল প্লাজার নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এমবিইএল)।

গত বছরের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রাণীগঞ্জ সেতুটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।