• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

কৃষি খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩  

দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার যে তহবিল করেছে, তা থেকে গরু মোটাতাজা করতেও ঋণ পাওয়া যাবে। অন্যান্য খাতের মতো ৪ শতাংশ সুদে মিলবে এই ঋণ।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। গত বছরের ১৭ নভেম্বর জারি করা ‘দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারে ‘গরু মোটাতাজাকরণ’ খাত অন্তর্ভুক্ত করে নতুন সার্কুলার জারি করা হয়। আগের সার্কুলারে বলা হয়েছিল, ধান চাষ, মাছ চাষ, শাক-সবজি, ফল ও ফুল চাষ, প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় পোলট্রি ও দুগ্ধ উৎপাদন খাতে এই তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ করা যাবে। মঙ্গলবার জারি করা নতুন সার্কুলারে ‘গরু মোটাতাজাকরণ’ খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

১৭ নভেম্বর জারি করা সার্কুলারে এই তহবিলের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, দেশের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন কৃষক।

তহবিলটির নাম ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতের জন্য পুনঃ অর্থায়ন স্কিম’। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার এই তহবিলের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রয়োজনে তহবিলের অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদ বাড়ানো হবে।

সার্কুলারে বলা হয়েছিল, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এতে বিশ্বে খাদ্যসংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। কৃষি খাতে স্বল্প সুদে ঋণপ্রবাহ বজায় রাখার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগের সঙ্গে অংশগ্রহণ চুক্তির মাধ্যমে এই তহবিলের সুবিধা নিতে পারবে। এসব ব্যাংকের চাহিদা, কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ও ঋণ বিতরণের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে কৃষি ঋণ বিভাগ তহবিল বরাদ্দ করবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে কৃষক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করবে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনবোধে বরাদ্দকৃত তহবিলের পরিমাণ পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।

সার্কুলারে আরো বলা হয়, এই তহবিলের অধীনে ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করবে। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক, বর্গাচাষি ও ফসল (ধান, শাক-সবজি, ফুল ও ফল) চাষের জন্য শুধু ফসল দায়বন্ধনের বিপরীতে এককভাবে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

শস্য ও ফসল খাতে সর্বোচ্চ পাঁচ একর জমিতে ফসল চাষের জন্য ঋণ পাবেন কৃষক। এসব ছাড়া অন্য খাতে ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ন্যূনতম জামানত গ্রহণের বিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে।

ঋণ পরিশোধে কৃষক বা গ্রাহক তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাস সময় পাবেন। এই তহবিলের ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরোনো ঋণ সমন্বয় করতে পারবে না। কোনো ঋণখেলাপি গ্রাহক এই ঋণ পাবেন না।

কৃষক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের দায়িত্ব ব্যাংকের ওপরই থাকবে। ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না। ঋণের বকেয়া নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে শোধ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব সমন্বয় করে আদায় করা হবে।

ঋণের কোনো অংশ সদ্ব্যবহার না হলে এবং ৪ শতাংশের বেশি সুদ আদায় করলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমাণ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদ এককালীন আদায় করবে।

তহবিলের আওতায় বিতরণ করা প্রতিটি ঋণ আলাদা ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। ঋণের বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগে প্রতি মাসের শেষে সাত কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করতে হবে।