• শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ০১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা
ব্রেকিং:
ড. ওয়াজেদ মিয়া অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই: শেখ হাসিনা জনগণের শক্তি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি: শেখ হাসিনা আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মে: গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইওএম মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা : প্রধানমন্ত্রী

কালোজিরার মধু চাষে সারে ৩ লাখ স্বপ্ন কৃষকের

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ধনিয়া ও কালোজিরা ফসলের সাথে চাষিরা মধু চাষে মাধ্যমে মৌসুমে বাড়তি ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় করবে।শনিবার(১৩ জানুয়ারী) উপজেলা কৃষি অফিস জাজিরা কর্তৃক বিতরনকৃত মৌ বক্স এবং মধু সংগ্রহের কার্যক্রম পরিদর্শন কালে উপজেলা কৃষি বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। বড়গোপালপুর ইউনিয়নে মধু সংগ্রহের কার্যক্রম পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন জাজিরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার মুসলিমা জাহান রুনিয়া,উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এম.সাইফুল হক,নিশিত বিশ্বাস সহ মৌ চাষী গন।

 উপজেলা উপসহকারি কৃষি অফিসার  নিশিত বিশ্বস বলেন,সম্প্রতি বিভিন্ন ফুলের মধু চাষে ঝুঁকছেন তরুণেরা। হয়েছেন উদ্যোক্তা। গড়ে তুলেছেন মধুর খামার। পেয়েছেন সফলতা। তরুণদের এই সফলতা ও কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ধনিয়া ও কালোজিরা চাষিরাও নেমেছেন মধু চাষে। এতে বেড়েছে ফসলের উৎপাদন। সঙ্গে ফসলের মৌসুমে বাড়তি ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছে তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মুসলিমা জাহান রুনিয়া বলেন, পদ্মার পলিবিধৌত জাজিরা উপজেলায় ধনিয়া, কালোজিরা, পেঁয়াজ-রসুনসহ নানা ধরনের মসলাজাতীয় ফসলের পাশাপাশি ব্যপক শাক ও সবজি চাষ হয়। সরিসা, ধনিয়া ও কালোজিরা ফুল থেকে আসে উন্নত মানের মধু, যাতে রয়েছে ঔষধি গুণ। ফলে দেশে-বিদেশে কালিজিরার মধুর রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। সে লক্ষ নিয়ে গত বছর আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মৌ বক্স বিতরণ করি।

 মৌ চাষী সাইদুল ফকির জানান,জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি জুড়ে জাজিরাতে দেখা যায় ভ্রাম্যমাণ মৌখামারিদের। যাঁরা আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। প্রতিবছর এ উপজেলায় গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার মৌবাক্স বসানো হয় ধনিয় ও কালোজিরার ফসলের মাঠে। প্রথম দিকে মৌ চাষকে স্থানীয় কৃষকেরা ভালোভাবে নেননি। পরে কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে কৃষকেরা নিজেরাই এই মৌ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফসলি মাঠে মৌবাক্স বসালে ফলন কমে যাবে কিংবা রোগ বা পোকামাকড় বেশি হয় বলে আগে ধারণা ছিল তাঁদের। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সে ধারণা দূর হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের মাঠের পাশাপাশি আমবাগানেও মৌবাক্স বসাতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এতে শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে জাজিরাতে প্রতি কেজি কালিজিরার মধু বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০০-৮০০ টাকা।

পালেরচর ইউনিয়নের মৌ উদ্যোক্তা দুদু মিয়া বলেন, ‘জাজিরাতে আগে সাতক্ষীরাসহ অন্য জেলা থেকে মৌ চাষ করতে আসতেন। স্থানীয় চাষিরা এই চাষ সম্পর্কে জানতেন না। বাড়তি হিসেবে মধু চাষের উপকারিতা জানতে গত বছর উপজেলার একটি মৌমেলায় যাই। সেখান থেকে আগ্রহ জাগে। তখন কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে তাঁরা প্রশিক্ষণসহ চারটি মধু চাষের বাক্স দেন। সেখান থেকেই শুরু। এখন আমার খামারে বাক্সের সংখ্যা ৯০। গত মাসে ২ লাখ টাকার মধু বিক্রি করেছি এবং আশাবাদী ধনিয়া ও কালোজিরা থেকে ৩-সাড়ে ৩ লাখ টাকার মধু বিক্রি করতে পারব।

জাজিরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ২৩টি খামারের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মৌবাক্স স্থাপন করা হয়। এসব খামার থেকে প্রায় ৬৫ মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য হতে পারে প্রায় ১০ কোটি টাকা। মধু উৎপাদনের খবর এবং স্থানীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন  জেলার কালোজিরার মধুর ব্র্যান্ড তৈরির করেছে।যা ইতিমধ্যে অনলাইনসহ দেশের বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে। জাজিরাতে সাতজন স্থানীয় মৌ উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। যাঁরা মধু উৎপাদন ও পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। সেখান থেকে মধু প্রক্রিয়াজাত করে অন্য উদ্যোক্তারা এটিকে বাজারজাত করেন।স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকার বাজারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে; এ সময় কালিজিরার উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়তি মধু উৎপাদন হচ্ছে। এতে কৃষক ও মৌচাষিরা অধিক লাভবান হবেন বলে আশা জেলা প্রশাসনসহ মৌচাষিদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. রবিআহ নূর আহমেদ বলেন, ‘জাজিরাতে কালিজিরা ফুলের মধু বাণিজ্যিকভাবে ইতিমধ্যে একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। সেখানে জেলা বীজ প্রশাসনের ব্র‍্যান্ডিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণে গতি আরও বেড়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকসহ মৌ চাষে কারিগরি পরামর্শ দিচ্ছে জেলা ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।’