• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

শরীয়তপুর বার্তা

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতীকে লড়ছেন বিএনপির সাবেক দুই নেতা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  

বগুড়া ৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দল ফ্রিডম পার্টির ‘কুড়াল’ প্রতীকে অংশগ্রহণ করছেন বিএনপির সাবেক দুই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সরকার বাদল ও কামরুল হাসান সিদ্দিকি জুয়েল। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে। অনেকেই বলছেন, স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিএনপি যে কারো সঙ্গে হাত মেলাতে পারে। এ বিষয়ে ছেড়ে কথা বলেননি আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও।

অন্যান্য প্রতীক বাদ দিয়ে কেন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দল ফ্রিডম পার্টির ‘কুড়াল’ প্রতীকে অংশগ্রহণ এমন প্রশ্নের জবাবে শাজাহানপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল সময় সংবাদকে বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে আপিল করে মনোনয়ন ফেরত পেয়েছি। অন্যান্য প্রার্থীদের বরাদ্দ হয়ে যাওয়ার অনেক পরে আমি প্রতীক পেয়েছি। বাকি প্রতীকগুলোর চেয়ে এটা স্পষ্ট ছিল। এ কারণে এটি বেছে নিয়েছি। তা ছাড়া কুড়াল দুর্নীতির বিরুদ্ধে আঘাতের প্রতীক। মেহনতি মানুষের প্রতীক। এটি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’

এদিকে নন্দীগ্রামের সাবেক পৌরসভা চেয়ারম্যান জুয়েলের কাছে প্রতীকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত ইমেজ। তার অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, ‘আমি যখন পৌরসভা নির্বাচনে লড়েছি, তখন আমার প্রতীক ছিল জগ। সে সময় দলীয় প্রতীক নিয়ে অনেকেই লড়েছেন। তবে তাদের বিপক্ষে আমি জগ মার্কা নিয়েই জয়লাভ করেছি। প্রতীক একটা পরিচিতিমাত্র। এর সঙ্গে আমার ব্যক্তি বা সামাজিক জীবনের কোনো প্রতিফলন নয়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতীকে নির্বাচন করা ন্যক্কারজনক।’

অতীতেও রাজনৈতিক স্বার্থে নামে-বেনামে যে কারো সঙ্গে বিএনপি হাত মিলিয়েছে এমন মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। তিনি বলেন, এই প্রতীক দেখতেই তো কেমন সন্ত্রাসীর মতো। বিএনপির সাবেক জনপ্রতিনিধি ছিলেন তারা। বিএনপি সব সময়ই এমন। মুখে বলে ভোট করবে না। অথচ নামে বেনামে তাদের নেতাকর্মীরা ঠিকই ভোট করে। এই প্রতীকটি নির্বাচন কমিশন থেকে নিষিদ্ধ করে দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যদিও বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকার দাবি বিএনপির। বিতর্কিত এই প্রতীকের ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন জেলা বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা।

তিনি বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের দুজনকেই প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক কোনো সদস্যপদও নেই।

এদিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হাসান বলেন, বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় কুড়াল প্রতীক ব্যবহারে আইনি কোনো বাধা নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য তাই এই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থী চাইলে এই প্রতীক নিতে পারে।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। এর আগে ৩০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, মেজর বজলুল হুদা ও ক্যাপ্টেন খন্দকার আবদুর রশিদ। দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর ১৯৮৭ সালে দেশে ফিরে বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠা করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনিরা। যাদের নির্বাচনী প্রতীক ছিল কুড়াল। দলটির নিবন্ধন বাতিল হলেও এখনও নির্বাচনে ব্যবহৃত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর রক্তের দাগ লেগে থাকা এই প্রতীক।