• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

সময় বাড়িয়েও শেষ হয়নি সংস্কার কাজ, ধুলায় নাকাল মানুষ

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০১৯  

শরীয়তপুর প্র‌তি‌নি‌ধিঃ শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কে ২৭ কিলোমিটার এলাকার সংস্কার কাজ চলছে ধীরগতিতে। এক দফা  সময় বাড়িয়েও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ধুলা-বালিতে দুর্ভোগে পরেছেন মানুষ। দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পন্যবাহী যানবাহনগুলো এ অবস্থার মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই  সড়কটি ব্যবহার করে চট্রগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত করেছে।

 

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের সদর উপজেলার মনোহর বাজার হতে ভেদরগঞ্জের নরসিংহপুর (আলুর বাজার) ফেরীঘাট পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কের নাজুক অবস্থায় দীর্ঘ দিন থেকে। সড়ক জুরে বড়বড় গর্ত থাকায় বৃষ্টির পানিতে ওই গর্ত কাদা ও পানি জমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারছিল না। এ কারনে গত এপ্রিল হতে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় ও বৃষ্টি কাদা না থাকায় ওই সড়ক দিয়ে পন্যবাহী ও যাত্রীবাহি যানবাহন চলাচল শুরু করেছে।

 
সওজ সূত্র আরো জানায়, দুটি গুচ্ছ প্রকল্পের মাধ্যমে মনোহর বাজার হতে নারায়নপুর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সংস্কারে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। গত ১৮ মার্চ শহীদ, এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা জেভি ও র‌্যাব আরসি, সরদার এন্টার প্রাইজ জেভি নামের দুটি ঠিকাদারী  প্রতিষ্ঠাকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। আর ওই সময় নারায়নপুর হতে নরসিংহপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের জন্য এক জন ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়, কিন্তু ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি আর কাজটি করতে আগ্রহি হননি। তখন পুনরায় দরপত্র দিয়ে ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে গত ২৬ আগষ্ট কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ওই ১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করার জন্য ১৫ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে।
আগের দুটি কাজ শেষ করে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সময় দেয়া হয় ছয় মাস। গত ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু তারা কাজ শেষ না করে সড়ক ও জনপথ বিভাগে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। সওজ তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৭০ দিন সময় বাড়িয়ে দেয়। গত ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প দুটির কাজ শেষ করার কথা ছিল।
 
এর মধ্যে র‌্যাব আরসি, সরদার এন্টার প্রাইজ জেভি সাজনপুর হতে নারায়নপুর পর্যন্ত যে অংশটির কাজ করছেন  তার ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশের কাজ চলছে।  জানতে চাইলে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক সিরাজ সরদার বলেন, সড়কের কাজটি করার জন্য নির্মান সামগ্রী প্রক্রিয়া করার জন্য একটি বড় জায়গা প্রয়োজন ছিল, জায়গাটি পেতে একটু সময় লেগেছে। তাছাড়া দুটি ঈদ ও নির্বাচনের কারনে শ্রমিক সংকট ছিল। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
 
মনোহর বাজার হতে সাজনপুর পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার অংশের সাড়ে পাাঁচ কিলোমিটার বিটুমিনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি দুুই কিলোমিটারের কাজ চলমান আছে। নারায়নপুর হতে নরসিংহপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে। ওই অংশের ১২ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দক বন্দ করা হয়েছে। সড়কের ওই অংশটি ধুলা বালুর কারনে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা জুরে ধুলা বালি। সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় আমাদের সমস্যা বেশি। দরজা জানালা বন্ধ করে ঘরে থাকতে হচ্ছে। ধুলা বালির জন্য রাস্তা দিয়েও চলতে পারছি না।
 
বাওই কান্দি এলাকার মুদিখানা দোকানের মালিক নুরুল আলম বলেন, সড়কের ধুলার কারনে দোকান খুলতে পারছি না। দোকানে ক্রেতাও আসছে না। খুলনা –চট্রগ্রাম পথের ট্রাক চালক শাহ আলম বলেন, এ সড়কটি দিয়ে সহজে খুলনা-চট্রগ্রাম যাতায়াত করা যায়। এ অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ এ সড়কের উপর নির্ভর। অথচ এই সড়কটির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অনেক অবহেলা। পাঁচ বছর যাবৎ সড়কটির খারাপ অবস্থা, একন কাজ হচ্ছে ধীর গতিতে। ট্রাক চালক জসিম উদ্দিন বলেন, ১০ মাস আগে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কাজের তেমন অগ্রগতি নেই। এখনো আমাদের ঝুঁকি নিয়ে খানাখন্দক আর গর্তের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
 
সংস্কার কাজের ধীরগতি নিয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সওজের নিবার্হী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, সড়কের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারদের চাপ দেয়া হচ্ছে।  জাুনয়ারী মাসের মধ্যে যাতে সড়কের ১৫ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা হয় তার উদ্যাগ নেয়া হবে। বাকি ১২ কিলোমিটার শেষ হতে আগামী জুন হবে।