• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শায়েস্তা করতেই ইজিবাইকচালক হাবুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২৪  

শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানা এলাকায় ইজিবাইক চালক হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু মাদবর হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও মূল পরিকল্পনাকারী আরিফসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)। দেনা-পাওনা নিয়ে তর্কের জেরে ইজিবাইক চালক হাবুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

গ্রেফতাররা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী আরিফ (২২), তার সহযোগী পারভেজ বেপারী (২৬) ও সজিব বেপারী (২২)। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর ও ঢাকার বনানী থানা এলাকা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর নেপথ্যের কারণ ও এ ঘটনায় কারা কারা জড়িত ছিল তার আদ্যোপান্ত জানিয়েছে গ্রেফতাররা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয় তুলে ধরেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, ইজিবাইক চালক হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু মাদবরের সঙ্গে গ্রেফতার আরিফের টাকা-পয়সার লেনদেন ছিল। তাদের মধ্যে দেনা-পাওনা নিয়ে তর্ক এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরিফ হাবিবের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাকে শায়েস্তার পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে গত ১৩ জানুয়ারি সকালে আরিফ ও তার সহযোগীদের নিয়ে সুইচ গিয়ার ও চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সখিপুরের কাচিকাটা ইউনিয়নের ৮৯ নম্বর হাজিয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। অন্যদিকে, হাবু যাত্রী নিয়ে নড়িয়ার ঘড়িসার বাজার থেকে সখিপুর থানার চর দুলারচর এলাকায় যাচ্ছিলেন। এসময় তাদের ইজিবাইকটি দুলারচর এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আরিফ ও তার সহযোগীরা গতিরোধ করে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, হত্যাকারীরা পথে ইজিবাইক থামিয়ে হাবুর সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার ওপর হামলা চালান আরিফ ও তার লোকজন। নাহিদ সরদার তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হাবুর মাথায় কোপ দেন। ওই সময় হাবু মাথা সরিয়ে নিলে তার কাঁধে লাগে। পরে গ্রেফতার পারভেজ ও সজিবসহ অন্যান্য সহযোগীরা তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। আরিফ হাবুর পেটের মধ্যে সুইচ গিয়ার দিয়ে ছুরিকাঘাত করেন। আঘাতের ফলে হাবুর গুরুতর জখম হয়। অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকেন।

তিনি আরও জানান, এ মামলার অন্য তিন আসামি আশরাফুল দেওয়ান, মাহাবুব বেপারী ও ইউসুফসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরিফ সখিপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মাঝে মধ্যে অটোরিকশা চালাতেন, কখনো কখনো ট্রাকের হেলপারি করতেন। কিন্তু তার মূল কাজ ছিল কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করা। নিজে বেপরোয়া চলাফেরার পাশাপাশি এলাকায় কিশোরদের টাকার লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করতেন।

তার সহযোগী পারভেজ এবং সজিব বেপারী আপন দুই ভাই। পারভেজ অষ্টম শ্রেণি এবং সজিব নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাদের মা একজন জর্ডান প্রবাসী এবং বাবার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

র‌্যাব-৩ এ কর্মকর্তা বলেন, অল্পবয়সে বাবা-মাকে কাছে না পেয়ে পড়াশোনা না করে তারা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তারা আরিফের নেতৃত্বে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আরিফের পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতার পারভেজ সবাইকে ফোন করে একত্রিত করেন এবং নিজে এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।