• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

শরীয়তপুরে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলাকালে ইউএনও`র ওপর হামলা : আত্মরক্ষার্থে ছোঁড়া হয় ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২২  

শরীয়তপুর প্রতিনিধি :শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেলের নেতৃত্বাধীন টিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে নৌপুলিশ। পরে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

শনিবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার পাইনপাড়া এলাকার মাঝ পদ্মায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় আটক ১০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুইটি স্প্রিড বোট ও একটি ট্রলারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসাইন ও মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে পদ্মা নদীতে অভিযানে নামেন ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল। এ সময় একটি ট্রলার ও দুই লাখ মিটার জাল জব্দ ও ১০ জেলেকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, দ্বীন ইসলাম (৪২), শানোয়ার (২০), রিয়াদ (২২), আক্কাস মালত (৪০), মোক্তার মিয়া (২০), রাজিব মিয়া (২৮), শাকিল (১৯), মনির হোসেন (২৬), সুজাত ফকির (২০) ও বাবুল ফকির (৪০)। তাঁদের মধ্যে ৯জনকে এক মাসের ও একজনকে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ইউএনও কামরুল হাসান সোহেলের নেতৃত্বে ওই টিম সন্ধ্যার দিকে মাঝ পদ্মায় অভিযানে যান। রাত পৌনে ১০টার দিকে পাইনপাড়া এলাকায় গেলে জেলেরা ওই টিমের ওপর হামলা করেন। তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ও সুরকিও ছোড়েন জেলেরা।

একপর্যায়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নৌপুলিশ ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে খবর পেয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশ ওই চর থেকে তাঁদের উদ্ধার করে মাঝিরঘাটে নিয়ে আসে।

জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, এখন ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা ইলিশ মিঠা পানিতে ডিম দেয়। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালাবে সরকার। অভিযান চলাকালীন সময় ইলিশ শিকার, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু জেলে নদীতে ইলিশ শিকার করছিলেন। ইউএনওর নেতৃত্বে আমরা জাজিরায় পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাই। পাইনপাড়া এলাকায় রাতে আমাদের ওপর হামলা করেন জেলেরা।

মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল হক বলেন, হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আজ রোববার তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল বলেন, আমরা সারা দিন পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালাই। এতে জেলেরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। রাতে পদ্মা নদীর পাইনপাড়া এলাকায় গেলে তাঁরা ট্রলার নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। তখন আমার পা ট্রলারের মাচায় আটকে আহত হই। আত্মরক্ষার্থে ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।