• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ওমিক্রন সুনামি থামবে কবে?

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২২  

করোনা মহামারিকালে দেশে রোগী শনাক্তের হারে নতুন রেকর্ড হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। ভয়ংকর ডেল্টার রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কবলে পড়ে দেশে দৈনিক রোগী শনাক্তের হারের রেকর্ড হলো।

২৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত বছর ডেল্টার সময় ২৪ জুলাই শনাক্তের সর্বোচ্চ হার ছিল ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ১৫ হাজার ৪৪০ জন। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো নতুন শনাক্ত ১৫ হাজারের বেশি। তার আগে ২৭ জানুয়ারি ১৫ হাজার ৮০৭ জন, ২৬ জানুয়ারি ১৫ হাজার ৫২৭ জন আর গত ২৫ জানুয়ারি ১৬ হাজার ৩৩ জন রোগী শনাক্তের কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ডেল্টার তুলনায় পাঁচ থেকে ছয়গুণ বেশি সংক্রমণক্ষমতা নিয়ে ওমিক্রন ছড়াতে থাকে বিদ্যুতের গতিতে। চলতি বছরের মধ্য জানুয়ারি থেকে সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে এখনও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য বেশি। তবে একটু একটু করে জায়গাটা ওমিক্রন দখল করে নিচ্ছে। দেশে ওমিক্রনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন তথা সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওমিক্রনের প্রভাবে দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের সে কথাকেই সত্যি করে ডেল্টার সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড ভেঙেছে ওমিক্রন।

ওমিক্রন মৃদু, এতে জটিলতা তেমন হয় না এবং মৃত্যুও ডেল্টার মতো হবে না বলা হলেও দেশের জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, যখন অনেক বেশি রোগী শনাক্ত হতে শুরু করবে তখন আনুপাতিকহারে মৃত্যুও বাড়বে।

তারা এও বলছেন, বিশ্বজুড়ে দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রন যে হারে ঊর্ধ্বগতি পেয়েছে, সেভাবে দ্রুত নেমেও গেছে। সেই হিসাবে আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে শনাক্তের হার কমতে পারে।

কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একে অনেকেই তৃতীয় ঢেউ বলছে। তবে ওমিক্রনের যে ভয়াবহতা দেখা যাচ্ছে তাকে আমি সুনামি বলতে চাই। এ সুনামি কতটা বিধ্বংসী হতে পারে, সেটা দেখতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।’

তবে এই সময়ের মধ্যে মানুষকে মাস্ক পরাতে বাধ্য করাতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সেইসঙ্গে টিকা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। নয়তো কোথায় গিয়ে ঠেকে বলা যাচ্ছে না। জানালেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-এর বর্তমান উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, যে সংক্রমণ দ্রুত ওঠে, সেটা দ্রুত নেমেও যায়। ফেব্রুয়ারির প্রথম ধাপ পর্যন্ত বাড়বে। শেষ সপ্তাহ নাগাদ কমে যেতে পারে।

তবে সংক্রমণের এ পর্যায়ে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি। ডা. মুশতাক বলেন, সরকারি ১১ দফা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পাশাপাশি মানুষকে সম্পৃক্ত করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

যখন ডেল্টা হয়, তখন কিন্তু করোনাকে প্রতিরোধ করার জন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি করার প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল ক্যাবিনেট। এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, ওই কমিটিতে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সবাই ছিলেন। যেখানে করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি টিকার কাজ করা হতো।

এটা গ্রামে কিছুটা কাজে আসে, শহরে একদমই কাজ হয় না জানিয়ে ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, শহরে এটা করার জন্য সিটি মেয়রদেরকে কাজ করতে হবে, তারা যেন উদাহরণ তৈরি করেন। ২০২০ সালে যখন জোনাল লকডাউন হয়েছিল, তখন তারা বেশ সক্রিয় ছিলেন। সেভাবেই এখন আবার কাজ করতে হবে।