• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

সমকামিতায় বাধ্য করায় কাউসারকে হত্যা করে কিশোর

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২২  

সমকামিতায় বাধ্য করায় হত্যা করা হয় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার মো. কাউসার হোসেন খান (৪০) নামে বিদেশফেরত এক বালু ব্যবসায়ীকে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৫ বছরের এক কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার কিশোর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং নিহতের মোবাইলের পোড়া অংশ বিশেষ, গায়ে পরিহিত জ্যাকেট, পরিহিত শার্ট প্যান্ট, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও একটি মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার বিকেলে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান (পিপিএম)।

গ্রেফতার ওই কিশোরের নাম সাফাওত হোসেন সিফাত। তার বাবার নাম শাহীন মোল্যা (৪২)। তাদের বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের বিএসডাঙ্গী গ্রামে।

গত শুক্রবার রাতে চরভদ্রাসনের চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিশাই মাতুব্বরের ডাঙ্গীতে হত্যার পর বালিচাপা দিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত কাউসার উপজেলা সদরের এমপিডাঙ্গী গ্রামের জালাল খানের ছেলে। তিনি বালির এবং কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ক্লু পেয়ে তাদের হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়। সিফাত পেশায় একজন একজন ইলেক্ট্রনিক্স মিস্ত্রি। কাজের সুবাদে তার সঙ্গে কাউসারের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে সমকামিতার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায়ই এ কাজে লিপ্ত হতেন তারা। যা সিফাতের মোটেই পছন্দ ছিল না। এজন্য কাউসার সিফাতকে ভয়ভীতিও দেখাতেন।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার রাতে সিফাতকে ফোন করে ডেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান কাউসার। সেখানে সিফাতকে সমকামিতার কাজে বাধ্য করলে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাউসার তার পকেট হতে সুইচ চাকু বের করে সিফাতকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকলে সিফাত তার হাত ধরে ফেলে এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কাউসারের গলায় চাকুর আঘাত লাগে। এতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে সিফাত তার হাত থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে পিঠের ওপর বসে গলায় ও মাথার পেছনে আঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনার পর তার মোবাইল, মোটরসাইকেল এবং চাকু নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

তিনি জানান, কাউসারকে হত্যা করে বাড়ি ফেরার পর তার মা-বাবা গায়ের রক্ত মাখা কাপড় দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে তাদেরকে সবকিছু খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্লা সিফাতের জামা কাপড় ধুয়ে ফেলেন। জ্যাকেটটি বসতবাড়ির মাটির মধ্যে পুঁতে ফেলেন এবং কাউসারের মোবাইল পুড়িয়ে ফেলা হয়। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু বাড়ির পাশে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলেন এবং কাউসারের মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের চানমারিতে রেখে যান।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, ওসি ডিবি মামুনুর রশীদ, চরভদ্রাসন থানার ওসি মিন্টু মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।