• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ভেদরগঞ্জে উন্মুক্ত জলাশয় ও প্রাতিষ্ঠানিক পুকুরে পোনামাছ অবমুক্ত

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১  

 শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ
ভেদরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের রাজস্ব খাতের আওতায় দেশীয় প্রজাতীর মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধিন উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়, প্লাবণভূমি ও প্রাতিষ্ঠানিক পুকুরে ৪ শ ১৩ কেজি পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে।

২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার,উপজেলার হোগলা মরাপদ্মা নদীর সরকারি এমএ রেজা কলেজ ঘাটে পোনামাছ অবমুক্ত করণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আল নাসীফ।উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা ইসলাম, ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। উপজেলা ৩টি উন্মুক্ত জলাশয়,১ প্লাবণভূমি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানিক পুকুরে এ মাছের পোনা ছারা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আল নাসীফ বলেন,বাংলাদেশের বিপুল জলরাশি বিভিন্ন ধরনের মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণিতে পরিপূর্ণ। জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও প্রাণী সম্পদের সাথে মৎস্যকে সমান গুরুত্ব দিয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সেই সাথে শামুক উন্নয়নেও কাজ করছে সরকারে মৎস্য বিভাগ।

দেশের বিভিন্ন জলরাশি যেমন পুকুর, খাল, বিল, হাওর ও বাওরে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির শামুক পাওয়া যায়। এ মধ্যে আপেল শামুক ও পন্ড স্নেইল ব্যাপক মাত্রায় পাওয়া যায়। শামুকের ব্যাপক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত গুরুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ শামুকের মাংস খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। সাধারণত কিছু আদিবাসী ভিন্ন বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ শামুকের মাংস খাদ্য হিসেবে গ্রহণে অভ্যস্থ নয়। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে গলদা চিংড়ির খাদ্য হিসাবে দিনে প্রায় গড়ে ৬৬.৫ কেজি/হেক্টর শামুকের মাংস ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলোয় বসবাসরত উপজাতী জনগোষ্ঠিরা ক্ষুদ্র পরিসরে শামুকের চাষ করছে। শামুক চাষের ক্ষেত্রে আলাদা খাবার দেয়ার প্রয়োজন হয় না। মাছ চাষের পুকুরে মাছের জন্য ব্যবহৃত খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ শামুক ভক্ষণ করে থাকে। শামুক পুকুরে বায়ো-ফিল্টার হিসেবে কাজ করে বিধায় পানির গুণাগুণ ভাল থাকে। মানুষ ও মাছের খাদ্য হিসেবে শামুকের চাহিদা থাকায় বাংলাদেশে শামুক চাষের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্য চাষের ক্ষেত্রে ফিশ মিলের বিকল্প হিসেবে শামুক ব্যবহার করা হয়। দেশের অনগ্রসর উপজাতি জনগোষ্ঠির স্বল্প খরচে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য শামুক চাষ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। পরিকল্পিতভাবে পুকুরে মাছের সাথে শামুকের সমন্বিত চাষ বা এককভাবে শামুকের চাষ করার মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠির জীবন জীবিকার উন্নয়ন করা যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী মানুষের উচ্চ প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলের জন্য স্বাদুপানির আপেল শামুকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শামুক অতিমাত্রায় আহরণের ফলে ইকোলজিক্যাল অসামঞ্জস্যতা তৈরী হতে পারে বিধায় শামুকের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র সংরক্ষণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং চাষ ও প্রজনন কার্যক্রম বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ঝিনুক ও শামুকের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন এবং চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন, দেশীয় জ্ঞান সম্প্রসারণ, ঝিনুক ও শামুকের চাষ ও ব্যবস্থাপনার উপর দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, দরিদ্র সুফলভোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ঝিনুক ও শামুকের বর্তমান সংখ্যা/মজুদ নির্ণয় করা, সর্বোপরি ঝিনুক ও শামুক রপ্তানীর সুযোগ সৃষ্টির প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে ২৪৫৬.৮৮ লক্ষ টাকায় আলোচ্য প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।