• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে বাম দলগুলো

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২০  

দেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলো এখন বহুধাবিভক্ত। দলগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ও আদর্শিক মতানৈক্য। বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন সময় ঐক্যবদ্ধ হলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মূলত হাঁকডাক, কথার প্যাঁচালিতেই সীমাবদ্ধ বাম দলগুলোর কার্যক্রম। অধিকাংশ বাম দলের সারা দেশে নেই কোনো কার্যক্রম। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো তো দুরের কথা, অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে অধিকাংশ বাম দল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাতেগোনা কয়েকটি দলের মানববন্ধন ও মিছিলভিত্তিক কর্মকাণ্ড থাকলেও রাজনীতির মূল স্রোত হয়ে মানুষের মাঝে আশা জাগাতে পারছে না তারা। একসময় বিভিন্ন আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে আর দাঁড়াতে পারছে না তারা। বর্তমানে অন্তঃকোন্দল ও একে অন্যের প্রতি অবিশ্বাসে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে দলগুলো। পরস্পরের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে যে বৃহত্তর বাম বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার কথা ছিলো, তাও হচ্ছে না বলে বামপন্থি নেতাকর্মীরা হতাশ।

দেশে বর্তমানে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (খালেকুজ্জামান), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (মোজাফফর), সাম্যবাদী দল (দিলীপ বড়ুয়া), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।

এ দলগুলোর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি (মেনন), ন্যাপ (মোজাফফর) ও দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী দল বর্তমানে সরকার ও ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছে। তবে সরকারের সঙ্গে বা এর বাইরে থাকলেও কোনো বাম দলই আকাঙ্খিত কার্যক্রম চালাতে পারছে না বলে মনে করেন বামপন্থি নেতারা।

এদিকে ছোট ছোট কয়েকটি বামপন্থি দলের সমন্বয়ে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোট আছে। এ মোর্চায় দল রয়েছে ৮টি। এ দলগুলো হলো বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দল, বাসদ (মাহাবুব), সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলন। এদের অধিকাংশই নাম সর্বস্ব। ঢাকার বাইরে এ জোটের কোনো অস্তিত্ব নেই। ঢাকায় জোটকেন্দ্রিক কিছু তৎপরতা ছাড়া কোনো জেলায় এদের নিজস্ব সংগঠন বা তৎপরতা নেই। ঢাকায়ও এ দলগুলোর আলাদাভাবে নিজস্ব কোনো কর্মসূচিও নেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান বলেন, শ্রমিক-কৃষক ও গণমানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বামপন্থিদের যে রাজনীতি ও কর্মসূচি থাকা উচিত ছিল, নানা সমস্যার কারণে তা কোনো বামপন্থি দলই করতে পারেনি। এটা সরকারের সঙ্গে থাকা এবং এর বাইরে থাকা সব বাম দলের ক্ষেত্রে সমানভাবে সত্য। বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো এখন ত্যাগ শিকার করে এক মঞ্চে থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা শ্রমিক-কৃষকদের জন্য কোনো কাজ করতে পারছি না। শুধু ওয়ার্কার্স পার্টি কেন, কোনো বামপন্থি দলই শ্রমিক-কৃষক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য সঠিকভাবে কোনো কাজ করতে পারছে না। তাই সবাই এক হতে না পারলে বাম দলগুলোর ঘুরে দাঁড়ানো কষ্ট সাধ্য ব্যাপার।