• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ইথানল-মিথানল দিয়ে স্যানিটাইজার, মরছে না জীবাণু

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২০  

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বেড়ে গেছে স্যানিটাইজার বিক্রি। নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছেমতো দামও। তবে যে জীবাণু ধ্বংসের জন্য এই স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে, তাতে নেই সেই ক্ষমতা।

রসায়নবিদরা বলছেন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানোর প্রক্রিয়া সহজ হলেও এর মিশ্রণের তারতম্যে মানের ঘাটতি হয়। ফলে জীবাণু ধ্বংস করার ক্ষমতা কমে যায়। ৯১ শতাংশ রাবিং অ্যালকোহল ও অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণে স্যানিটাইজার বানানোর পর দেখা গেছে, অ্যালকোহলের পরিমাণ ৬০ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। আবার ৭০ শতাংশ আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল দিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানো হলে বাকি উপকরণ মেশানোর পর এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৭ শতাংশ। এই পরিমাণ অ্যালকোহলের জীবাণু ধংস করার ক্ষমতা নেই।

অভিযোগ রয়েছে, স্যানিটাইজারে ৭০ শতাংশ আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল রাখার কথা বললেও বাস্তবে তা নেই। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান অ্যালকোহলের পরিবর্তে ব্যবহার করছে ইথানল বা মিথানল। মার্কেট  থেকে স্যানিটাইজার কিনে ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা যায়, নমুনায় আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল থাকতে পারে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ শতাংশ। এর সঙ্গে মিশেছে রং, সুগন্ধি ও পানি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত উপকরণ ও মান না মেনেই তৈরি হচ্ছে মানহীন এসব স্যানিটাইজার।

হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির উপায়

রসায়নবিদ ড. সামশুদ্দিন জামান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে দুইভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা যায়। ৯৬ শতাংশ ইথানলের (ইথাইল এলকোহল) সঙ্গে ৩ শতাংশ হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, ৯৮ শতাংশ গ্লিসারল ও ঠাণ্ডা করা ফোটানো পানির মিশ্রণে এবং ৯৯.৮ শতাংশ আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহলের (প্রোপানল) সঙ্গে ৩ শতাংশ হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ৯৮ শতাংশ গ্লিসারল ও ঠাণ্ডা করা ফোটানো পানির মিশ্রণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা যায়।

খুব সহজে ১০ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের জন্য ইথানল ৮ হাজার ৩৩৩ মিলিলিটার, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ৪১৭ মিলিলিটার, গ্লিসারল ১৪৫ মিলিলিটার এবং ১ হাজার ১০৫ মিলিলিটার ঠাণ্ডা করা ফোটানো পানির মিশ্রণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা সম্ভব। এজন্য প্রথমে অ্যালকোহল ১০ লিটার বোতলে ঢেলে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড সিলিন্ডার দিয়ে মেপে মেশাতে হয়। এরপর গ্লিসারল ও পানি মিশিয়ে পুনরায় মিশ্রণ করতে হবে। শেষে ১০০ মিলিলিটারের বোতলে ভরে ছিপি লাগিয়ে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী করার জন্য রেখে দিতে হবে।

এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, নিয়মিত ও ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে স্যানিটাইজারের প্রয়োজন হয় না।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ আরিফুল আমিন বলেন, নিম্নমানের স্যানিটাইজার ব্যবহারের ফলে চর্মরোগ সৃষ্টি হতে পারে। সুযোগসন্ধানীরা এই সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের নামে ক্যামিক্যাল মেশানো ক্ষতিকর দ্রব্য বিক্রি করছে। তার চাইতে ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে হাত ধোয়াই উত্তম। আবার বিকল্প হিসেবে ২০ লিটার পানিতে এক চা চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে তা দিয়ে স্প্রে করলে তা জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করবে।