• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ভাঙন রোধে ৩৩ লাখ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

 

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, পদ্মার ডানতীর শরীয়তপুর নড়িয়া-জাজিরা এলাকায় ভাঙন রোধে ২৮ লাখ জিও ব্যাগ ফালানোর কথা, সেখানে ৩৩ লাখ জিও ব্যাগ ফালানো হয়েছে। সিসি ব্লক ফালানো হচ্ছে। এটি তিন বছরের প্রকল্প। এক বছরে যা কাজ করার কথা তার চেয়ে বেশি করেছি। এতো বড় প্রকল্প রাতারাতি করা সম্ভব হয় না।

রবিবার দুপুরে নড়িয়া উপজেলার উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষা বাঁধে ভাঙন পরিদর্শণে এসে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নড়িয়া রক্ষা বাঁধে ভাঙন রোধে আমরা কাজ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে। কাজের কোন ধরনের ঘটতি হয়নি। উইপোকা ও ইদুর গর্ত করার ফলে নিজ দিয়ে সুরুঙ্গ হয়ে যায় তার কারনে নদীর পাড়গুলো ভেঙ্গে পরে। আগামি বছর থেকে প্রতিটি বাঁধ দেয়ার আগে ভালোভাবে পাড়গুলো ভিতর দেখে পরীক্ষা করা হবে। পানিস্পদ মন্ত্রণালয় ও পানিউন্নয়ন বোর্ড নড়িয়ায় ভাঙনের কারণ তদারকি করছেন। ভাঙ্গন রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করছে। আমরা ভাঙন রোধ না হওয়া পর্যন্ত অসহায় ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে থাকবো। 

এ সময় পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, গত বছর নড়িয়ায় ৫ হাজার ৮১ পরিবার তাদের বাড়িঘর হারিছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। দ্রুত কাজ করার কারনে এ বছর নড়িয়ার ভাঙন ঠেকেছে। নদীতে স্রোত ও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর কিছু একটি জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। 
এ সময় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার, শরীয়তপুর পউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার, নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার এলাকা জুরে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে ওই এলাকার ৫ হাজার ৮১ পরিবার গৃহহীন হয়। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলিন হয়ে যায়। ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় এক হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পর অনুমোদন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নৌবাহীনির প্রতিষ্ঠান খুলনা শীপইয়ার্ড লিমিটেডকে ওই কাজের কার্যদেশ প্রদান করেন। যার মধ্যে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যায়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর হতে জাজিরার কায়ুম খার বাজার পর্যন্ত আট দশমিক নয় কিলোমিটার অংশে নদীর তীর রক্ষার কাজ। বাকি টাকা দিয়ে নদীর চরখনন করা হবে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে তিন বছরে। প্রথম বছরে ৪০ লাখ বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। দ্বিতীয় বছর ও তৃতীয় বছরে ৩২ লাখ ৫০ হাজার সিসি ব্লক ফেলা ও প্রকল্পের অন্যান্য কাজ করার কথা। ইতোমধ্যে পাউবোর  ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল গ্রুপ নড়িয়া ও জাজিরার সাত কিলোমিটার এলাকায় ৩৩ লাখ বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। আর ২৫ হাজার সিসি ব্লক ফেলেছে।
গেল ১৯ সেপ্টেম্বর হতে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে স্রোত বেড়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত নড়িয়ার উত্তর কেদারপুর এলাকায় নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের ২৮০ মিটার অংশ ধসে যায়।  এমন পরিস্থিতিতে ওই স্থানের ধস ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করে। রবিবার দুপুর পর্যন্ত ১১ হাজার বালুর জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং ৫ হাজার সিসি ব্লক ফেলেছে ।