• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

ভোলগা থেকে পদ্মায় এলো পরমাণু চুল্লিপাত্র!

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২০  

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মিতব্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্র রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (চুল্লিপাত্র) প্রকল্প এলাকার নদী বন্দরে এসে পৌঁছেছে। রাশিয়া থেকে নিয়ে আসা হয়েছে একটি স্টিম জেনারেটরও।

সূত্র বলছে, মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০ টার কিছু পরে প্রকল্প এলাকার নবনির্মিত জেটিতে নোঙ্গর করেছে চুল্লিপাত্র এবং জেনারেটরবাহী বিশেষায়িত বার্জ। নৌবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় এটি মংলা বন্দর থেকে রূপপুরে আনা হয়। যন্ত্র দুটি নির্মাণ করা হয়েছে রাশিয়ার বৃহত্তম নিউক্লিয়ার শিল্প এলাকা ভোলগাদোনস্কে।

চুল্লিপাত্রটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন এবং স্টিম জেনারেটরের ওজন ৩৪০ টন। এর আগে আগষ্টের শেষ দিকে রাশিয়ার পেট্রোজাবাদ বন্দর থেকে যন্ত্র দুটি নিয়ে বিশেষ জাহাজ বাংলাদেশে রওনা দেয়। ১৪ হাজার কিলোমিটার আন্তর্জাতিক নৌ-পথ পাড়ি দিয়ে সেগুলো গেলো ২০ অক্টোবর মংলা বন্দরে পৌঁছায়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এআরবি'কে (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরমাণু বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন) বলেন, 'রাশিয়া থেকে এতপথ পাড়ি দিয়ে যন্ত্রগুলো রূপপুরে পৌঁছানোর বিষয়টিতে প্রকল্পটি নিয়ে জনগণ আরও আস্থা পাবে। এটি রাশিয়ায় বিখ্যাত নদী ভোলগা থেকে বাংলার আরেক নদী পদ্মায় আসতে সবমিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়েছে।'

তিনি আরও জানান, 'রাশিয়ায় কয়েকটি শহরে রূপপুরের সব ধরণের যন্ত্রপাতি সময়ের সাথে তাল মিলিয়েই তৈরি হচ্ছে। এর মাধ্যমে পরমাণু প্রযুক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে আরো একধাপ এগিয়ে গেল দেশ।'

চুক্তি অনুযায়ী দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২২ এবং দ্বিতীয়টি ২০২৩ সালে নির্মাণ শেষ করবে রাশিয়ান ঠিকাদার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট। যথাক্রমে পরের বছর থেকেই পরমাণু জ্বালানি ইউরোনিয়াম লোড করে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে।

ইতিমধ্যে রূপপুরে প্রথম ইউনিটের ভৌত কাঠামোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শৌকত আকবর এআরবি'কে বলেন, 'নতুন বছরের শুরুতেই এগুলোকে রূপপুরের ভৌত কাঠামোর মধ্য স্থাপন করা হবে। সব ঠিক থাকলে, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ওই ভৌত কাঠামোর ভেতর স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর কাঠামোর উপরিভাগে ছাদ (বিশেষ ডোমের) নির্মাণ কাজ শুরু হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে নির্ধারিত সময়সূচি ঠিক রেখেই কাজ চলছে রূপপুরে। করোনা মহামারিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোদমে কাজ চলছে রূপপুরে।'

রাশিয়ার ঋণ ও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব পরমাণু সংস্থা-রোসাটমের কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। জনবল প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা; যার ৯০ ভাগ ঋণ সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া।

উল্লেখ্য, ভিভিইআর-১২০০ চুল্লিবিশিষ্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘থ্রি-প্লাস (৩+ জেনারেশন শ্রেণিভুক্ত; এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও চুল্লি একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালু থাকবে) প্রযুক্তির।