• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

রাউজানে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৯  

রাউজানের দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অভিযানে তালিকাভুক্ত শীর্ষ এক ডাকাতকে গ্রেফতার সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এসময় ছুরিকাঘাতে ওসি কেফায়েত সহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামের পূর্ব রাউজানের রাবার বাগান সংলগ্ন ঘোড়া শামসুর টিলা এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো হলো- দেশিয় তৈরি ১০টি শর্টগান, ৬টি দেশিয় তৈরি পাইপ গান, ৩টি দেশিয় তৈরি এক নলা বন্দুক, ১টি গ্যাস গান সদৃশ অস্ত্র, পুরাতন ম্যাগজিন ১টি, ৭টি কার্তুজ, ৭টি কার্তুজের খোসা, দেশিয় তৈরী এক নলা বন্দুকের তটি অংশ, কাঠের বাট ২৭টি, ছোট লেদ মেশিন ১টি, তৈলের পাম্প বক্স ১টি, হ্যান্ড ড্রিল মেশিনসহ আরও বেশ কিছু অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার শীর্ষ ডাকাত আলমগীর (৪১) প্রকাশ আলম রাউজান পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজান এলাকার সিদ্দিক চৌধুরী বাড়ির মোহাম্মদ আব্দুল সাত্তারের পুত্র। তার নামে রাউজান, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানায় খুন, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ১৭ মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে রাউজান থানা পুলিশ।

অভিযানে রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ, উপ পরিদর্শক (এসআই) সাইমুল ইসলাম, কনস্টেবল কামাল, হামিদ হোসাইন আহত হয়। আহতদের রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে ডান হাতে ছুরিকাঘাতে আহত ওসিকে প্রথমে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেফায়েত উল্লাহ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় উপজেলার পূর্ব রাউজানের একটি দূর্গম পাহাড়ে ঘোড়া শামসু টিলার উপর কতিপয় কিছু লোক দেশিয় অস্ত্র তৈরি করে বিক্রি করছে। খবর পেয়ে থানার উপ পরিদর্শক সাইমুল ইসলাম, মহসিন রেজা, শেখ জাবেদ মিয়া, মৃদুল বড়ুয়া ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাত আনুমানিক পৌণে তিনটার দিকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আলম ডাকাত ও তার অনুসারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ১৫ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৫ রাউন্ড গুলি করে। গুলি বিনিময় শেষে আলম ডাকাত তার হাতে থাকা অস্ত্র ফেলে দিয়ে ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে দৌঁড়ে পালানোর সময় ওসিকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও সহযোগিরা পালিয়ে যায়।

ওসি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অভিযান চালিয়ে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ডাকাত সর্দার আলমকে গ্রেফতার করায় এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।

স্থানীয়রা জানান, ডাকাত আলম এলাকায় ছিল মূর্তিমান আতংক। সে কয়েকমাস পূর্বেই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে এই অস্ত্র তৈরির কারখানাটি গড়ে তুলেছিল। স্থানীয় একটি সূত্র জানায় সে এক সময়ের অধুনালুপ্ত এনডিপির ক্যাডার ছিল।

ওসি আরও জানান, স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে দূর্গম টিলার পাদদেশে দুয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবারের বসতি রয়েছে। এই ঘটনায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতারের পর ডাকাত আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে সে একেক সময় একেক রকম তথ্য দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।