• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শরীয়তপুর বার্তা

রাতে তাণ্ডব চালিয়ে সকালে নিম্নচাপে পরিণত আম্ফান

শরীয়তপুর বার্তা

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২০  

বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যারাত থেকে শুরু হয় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডব। সারারাত এটি ঘূর্ণিঝড় রূপে থেকেই দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে। সারারাত তাণ্ডব চালানোর পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার পর এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর স্থল নিম্নচাপ হিসেবে রাজশাহীতে অবস্থান করছিল আম্ফান।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর। এ সময় এক আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘আম্ফান এখন রাজশাহী অঞ্চলে আছে। আম্ফান ঘূর্ণিঝড় (বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারের ওপরে থাকলে ঘূর্ণিঝড় বলে) থেকে একধাপ নিচে নেমেছে। এটা এখন স্থল নিম্নচাপ হিসেবে আছে। আমরা কেবলই এটাকে নিম্নচাপ হিসেবে ইস্যু করলাম। সুতরাং এর কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত এটা ঘূর্ণিঝড় রূপেই ছিল।’

আম্ফান অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫১ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানে সাতক্ষীরায়। এটি ছিল বাংলাদেশে আম্ফানের সর্বোচ্চ গতি বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।

আম্ফান একই অঞ্চলে কিছু সময়ের বিরতিতে দুইবার আঘাত হানে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ওই আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, ‘একটা ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাসার্ধ থাকে ৩০০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। আর ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র থাকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাস থাকে কম, আকাশ থাকে পরিষ্কার। ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাসার্ধের সম্মুখ অংশ প্রথমে আঘাত হানে। তারপর যখন কেন্দ্রের অংশে যায়, তখন বাতাস কমে যায়। কেন্দ্র অংশ অতিক্রম করার পর ঘূর্ণিঝড়ের পেছনের অংশ আবার আঘাত করে প্রবল গতিতে। গত সারারাতে বাংলাদেশে এভাবে আঘাত করেছে ঘূর্ণিঝড়টি। সুতরাং আম্ফানের প্রথম ও শেষ আঘাতে বাতাস বেশি ছিল, মাঝখানে বাতাস কম ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আম্ফান উপকূল অতিক্রম করার পর সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা এসব অঞ্চল অতিক্রম করে রাজশাহীতে অবস্থান করছে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থল নিম্নচাপ রূপে। এটি গাইবান্ধা অঞ্চলে দিয়ে বিদায় নিতে পারে।’

এদিকে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যশোরে দুজন, পটুয়াখালীতে দুজন, ভোলায় দুজন, পিরোজপুরে একজন, সন্দ্বীপে একজন ও সাতক্ষীরায় একজন রয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। ইতোমধ্যে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলোর অর্ধশত পয়েন্ট ভেঙে গেছে। জনপদে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, উপড়ে পড়েছে গাছপালা।

অন্যদিকে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে তছনছ হয়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়টি রাজ্যটিতে আঘাত হানে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দফতর। তখন এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার।